শনিবার ২৬ জুলাই ২০২৫ - ০৯:২৫
ইরান আগের চেয়েও শক্তিশালী হবে; শত্রুরা হবে ব্যর্থ

ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরানের সামরিক ও বৈজ্ঞানিক অগ্রগতির অন্যতম প্রধান স্তম্ভ—বীর শহীদদের শাহাদাতের চল্লিশতম দিন উপলক্ষে জাতির প্রতি এক আবেগঘন ও প্রত্যয়দীপ্ত বার্তা দিয়েছেন ইসলামী বিপ্লবের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহিল উজমা খামেনেয়ী। তিনি এই বার্তায় বলেন, ইরান আগের চেয়েও শক্তিশালী হবে; আর শত্রুরা ব্যর্থ হবে।

হাওজা নিউজ এজেন্সি: আয়াতুল্লাহ খামেনেয়ী তার বিবৃতিতে এই দিনকে “বেদনার পাশাপাশি গৌরবের দিন” বলে অভিহিত করেন।

শহীদদের হারানো—জাতির জন্য চরম বেদনা, তবে শত্রুর লক্ষ্য ব্যর্থ

সর্বোচ্চ নেতা বলেন, “আমাদের কিছু প্রিয় নাগরিকের শাহাদাতের চল্লিশতম দিন উপস্থিত হয়েছে। তাদের মধ্যে ছিলেন দক্ষ সামরিক কমান্ডার ও প্রখ্যাত পরমাণু বিজ্ঞানীরা, যাদের নির্মমভাবে শহীদ করেছে নৃশংস জায়োনিস্ট শাসকগোষ্ঠী—ইরানি জাতির চরম শত্রু।”

তিনি শহীদ বাকেরি, সালামি, রশিদ, হাজি জাদেহ, শাদমানি, তেহরানচি, আব্বাসি ও অন্যান্য বীর সন্তানদের স্মরণ করে বলেন, তাদের হারানো যে কোনো জাতির জন্যই গভীর ক্ষতির বিষয়। তবে শত্রুরা তাদের লক্ষ্য পূরণে ব্যর্থ হয়েছে এবং ভবিষ্যতে প্রমাণ হবে যে,
“সামরিক ও বৈজ্ঞানিক অগ্রগতি পূর্বের চেয়ে আরও বেশি গতিতে উচ্চ লক্ষ্যের দিকে অগ্রসর হবে, ইনশাআল্লাহ।”

শাহাদাত—এক মহান গন্তব্য
তিনি বলেন, “আমাদের শহীদরা এমন পথই বেছে নিয়েছিলেন যার শেষ প্রান্তে ছিল শাহাদাতের মহিমাময় পরিণতি। তাঁরা ত্যাগ ও আত্মোৎসর্গের এমন এক স্থানে পৌঁছেছেন, যা ঈমানদার মানুষের আরাধ্য।”

যদিও এই শোক ইরানি জাতি, বিশেষত শহীদ পরিবারের জন্য গভীর ও বেদনাদায়ক, তথাপি তিনি শহীদ পরিবারের অসাধারণ ধৈর্য ও আত্মিক দৃঢ়তার প্রশংসা করেন।

জাতির ঐক্য ও প্রতিরোধের নিদর্শন
সর্বোচ্চ নেতা বলেন, এই দুঃখজনক ঘটনার মধ্যেও কিছু উজ্জ্বল শিক্ষা জাতিকে আলোকিত করে:

১. শহীদ পরিবারের ধৈর্য, সহিষ্ণুতা ও আধ্যাত্মিক শক্তি, যা বিশ্বের ইতিহাসে বিরল।

২. সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর দায়িত্বশীলতা ও স্থিরতা, যারা এ আঘাতে ভেঙে পড়েনি।

৩. ইরানি জাতির ঐক্য ও প্রতিরোধের অটলতা, যা শত্রুর ষড়যন্ত্রকে ব্যর্থ করে দিয়েছে।

তিনি জোর দিয়ে বলেন, “ইসলামী ইরান আল্লাহর সাহায্যে দিনে দিনে আরও শক্তিশালী হবে এবং শত্রুরা ব্যর্থ হবে, ইনশাআল্লাহ।”

বার্তা শুধু আবেগের নয়, দায়িত্বেরও
এই বার্তায় সর্বোচ্চ নেতা বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষের প্রতি দায়িত্বের বিষয়টি স্মরণ করিয়ে দেন:
জাতীয় ঐক্য রক্ষা—সব নাগরিকের দায়িত্ব।
জ্ঞান ও প্রযুক্তিতে গতি—বৈজ্ঞানিক সম্প্রদায়ের কর্তব্য।
জাতির মর্যাদা ও সম্মান রক্ষা—লেখক, চিন্তাবিদ ও গণমাধ্যমকর্মীদের দায়িত্ব।
নিরাপত্তা ও স্বাধীনতা সংরক্ষণ—সামরিক বাহিনীর দায়িত্ব।
কার্যকর তদারকি ও সম্পাদন—নির্বাহী সংস্থার দায়িত্ব।
আধ্যাত্মিক দিকনির্দেশনা ও ধৈর্য শিক্ষা—ধর্মীয় নেতাদের দায়িত্ব।
বিপ্লবী চেতনা ও সচেতনতা রক্ষা—বিশেষত তরুণদের দায়িত্ব।

শহীদ ও তাঁদের পরিবারকে অভিবাদন
সর্বোচ্চ নেতা বার্তার শেষে বলেন, “ইরানি জাতির প্রতি সালাম। তরুণ শহীদ, নারী শহীদ, শিশু শহীদ এবং তাঁদের শোকসন্তপ্ত পরিবার-পরিজনের প্রতি অভিবাদন।”

এই বার্তা আবারও প্রমাণ করে যে, ইরান শুধু এক রাষ্ট্র নয়, বরং আত্মত্যাগ, নৈতিকতা ও ঈমানি প্রতিরোধের এক অদম্য ভিত্তি।

আপনার কমেন্ট

You are replying to: .
captcha